fbpx

যে ভুল গুলো আমার ব্লগের গ্রোথ থামিয়ে দিয়েছে 

“যে করে সেই ভুল করে। আর যে করে না সে ভুলও করে না।”  

এর অর্থ হচ্ছে কিছু করতে গেলে ভুল হবেই, এটাই যেমন সত্য ঠিক তেমনি সেই ভুল যত কম করা যায় অথবা যত দ্রুত সেই ভুল থেকে শিখে পুণরায় ফিরে আসা ততই ভাল আর মংগল। 

আমিও আপনাদের মত ছোট খাটো অনেক ভুল করি আর প্রতিনিয়ত করছি। কিন্তু আমার মানসিকতা থাকে এই ভুলগুলো থেকে শিক্ষা গ্রহণ করা এবং পুনরায় সেই ভুলগুলো যাতে সংঘটিত না হয় সেদিকে সজাগ আর সচেতন থাকা। আবার কোন ভুল অনিচ্ছাকৃত ভাবে হয়ে গেলে যত দ্রুত সম্ভব সংশোধনের চেষ্টা করা।

চলুন কথা না বাড়িয়ে মুল আলোচনা শুরু করা যাক –

বিগত কিছু দিন যাবত আমি খেয়াল করলাম আমার “গ্রো উইথ নাহিদ” ব্লগের গ্রোথ থেমে আছে। যেহেতু আমি একজন ডাটা নির্ভর মানুষ তাই গুগল এনালাইটিক্স এর ডাটা নিয়ে একটু কাজ করা শুরু করলাম।

গুগল এনালাইটিক্স অনুসারে আমার গুগল সার্চ থেকে প্রাপ্ত ট্রাফিক আগের মতই আছে। ডিরেক্ট ট্রাফিক বেড়েছে কিছুটা। কিন্তু সোশ্যাল ট্রাফিক কমেছে। এবং এর মুল কারণ হচ্ছে নতুন কন্টেন্ট না লিখা এবং সোশ্যাল মিডিয়াতে শেয়ার না করা। কিন্তু এটিও একমাত্র কারণ না। আরও বেশ কিছু কারণ প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে আমারে এই ব্লগের গ্রোথ কমিয়ে দিয়েছে

#১। সঠিক কন্টেন্ট প্ল্যানিং না করা 

প্রথমে “গ্রো উইথ নাহিদ” ব্লগটি যেহেতু নন কমার্শিয়াল ব্লগ ছি, তাই কন্টেন্ট ক্যালেন্ডারের গুরুত্ব জানা সত্যেও এই জায়গাটিতে খানিকটা উদাসীন ছিলাম। এই ব্লগ নিয়ে দীর্ঘমেয়াদি কোন পরিকল্পনা ছিলো না। বেশির ভাগ সময় দেখা গিয়েছে, যখন যেই টপিক বা বিষয়ের উপর লিখতে ইচ্ছে করেছে তার উপরেই আর্টিকেল লিখেছি। এতে অনেক কন্টেন্ট তৈরি হলেও কণ্টেন্ট বা আর্টিকেলের মধ্যে কোন সিকোয়েন্স ছিলো না। যার ফলে একজন ভিজিটরের জন্য কোন কন্টেন্ট এর পর কোন কন্টেন্ট পড়া উচিত তা পরিষ্কার ছিল না। যা বিক্ষিপ্ত ভাবে আমার অডিয়েন্সকে সহায়তা করেছে কিন্তু একজন নতুন অডিয়েন্স এর জন্য কোন স্টেপ বাই স্টেপ গাইডলাইন ছিল না। যদিও আমি সেখান থেকে অনেকটা বেড়িয়ে এসেছি এবং কিছু সিকোয়েন্স নিয়ে কাজ করছি। যেমন, আপনি অনলাইন বিজনেস শুরু করতে চাইলে এই কন্টেন্ট গুলো একটির পর আরেকটি পড়তে পারেন। আরও নতুন কন্টেন্ট যোগ হচ্ছে।
 

#২। অনিয়মিত আর্টিকেল পাবলিশ করা  

যেহেতু আমার কোন কন্টেন্ট ক্যালেন্ডার ছিলো না সেই সাথে ছিলো না কন্টেন্ট প্ল্যানিং সেহেতু আমার আর্টিকেল পাবলিশ প্রক্রিয়া ছিল অনিয়মিত। কখনো এক সপ্তাহে তিন টা পোস্ট আবার কখনো তিন মাসে একটি পোস্ট পাবলিশ করা হয়েছে। এভাবেই তৈরি হয়েছে কন্টেন্ট, সেই সাথে ছিলো না একটা ধারা যা রক্ষা করা খুব জরুরি ছিলো। এর ফলে যারা আমার এক্সিস্টিং অডিয়েন্স আমার সাইটে নিয়মিত ভিজিট করতো নিত্য নতুন কন্টেন্টের আশায়, কিন্তু নতুন কন্টেন্ট বা আর্টিকেল না পাওয়ায় হতাশ হয়ে ফিরে গেছে। এতে সাইটে ভিজিটর ক্ষানিকটা কমে গিয়েছে। যা নিঃসন্দেহে আমার গ্রোথ কমিয়ে দিয়েছে।   

#৩। সাবস্ক্রাইবারদের নিয়মিত ইমেইল না পাঠানো 

ব্লগিং শুরুর প্রথম দিকে আমি প্রতিনিয়ত নতুন নতুন সাবস্ক্রাইবার পেতাম, যারা নতুন নতুন কন্টেন্ট এর আশায় সাবস্ক্রাইব করে রেখেছে আমার এই সাইটে। যাদের কে আমি নিয়মিত ইমেইল পাঠাতে পারতাম না। যার ফলে আমার ইমেইল লিস্ট এর ওয়ার্ম লিড কোল্ড হয়ে গিয়েছে। অর্থাৎ নিয়মিত যোগাযোগের অভাবে আমার পাঠকের সাথে ক্ষানিকটা দূরত্ব সৃষ্টি হয়েছে। যদিও আমার ইমেইল অটোমেশনের পুরো সেটআপ প্রস্তুত করা আছে অনেক আগে থেকেই, কিন্তু শুধুমাত্র ফোকাস এর অভাব এবং অন্যান্য কাজে ব্যস্ততার কারণে ইমেইল পাঠানো সম্ভব হয়ে উঠে নি। আমি ইমেইল অটোমেশনের জন্য সাধারণত মেইল চিমপ ব্যবহার করে থাকি।  

#৪। এসইও ট্রাফিক নিয়ে কাজ না করা 

আমি আমার “গ্রো উইথ নাহিদ” ব্লগে আর্টিকেল লেখার সময় কখনো সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন নিয়ে খুব একটা ভাবিনি। যদিও আমার ৭০ ভাগ ট্রাফিক আসে সার্চ ইঞ্জিন থেকে। তারমানে আমার অনেক গুলো আর্টিকেল এখনো গুগলে র‍্যাংক করে আছে। সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজড কন্টেন্ট লিখলে আরও অনেক বেশি নতুন ট্রাফিক পাওয়া যেত যা আমার এই ব্লগের গ্রোথ বাড়াতে ক্ষানিকটা সাহায্য করতো। আর যেই কন্টেন্ট গুলো সেকেন্ড পেজে র‍্যাঙ্ক করে আছে তা আরেকটু অপ্টিমাইজ করলে হয়তো গুগলের প্রথম পেইজে চলে আসতো অনায়াসে আর এজন্য আমি ট্রাফিক পেতাম বহুগুণে।   

#৫। ফেসবুক পিক্সেল ওয়েবসাইটে যুক্ত না করা 

প্রথমদিকে যেহেতু নন কমার্শিয়াল ব্লগ ছি, তাই এড রান করার চিন্তা কখনোই মাথায় আসে নাই কিন্তু তারপরেও ফেসবুক পিক্সেল এই ওয়েবসাইটে এড করে রাখা যেত। তাহলে যদি কখনো কমার্শিয়াল কারণে রিটার্গেটিং করার দরকার হত তাহলে তা কাজে লাগানো যেত। 

#৬। গ্রুপে এক্টিভিটি কমিয়ে দেয়া

কথায় আছে, কন্টেন্ট কোয়ালিটি ভাল হলে তার বিজ্ঞাপন লাগে না এবং এটি সত্য। কোন প্রকার প্রচারণা ছাড়াই আমার ফেসবুক গ্রুপ শুধু মাত্র ভাল কন্টেন্ট এর কারণে প্রায় ৪ হাজার মেম্বারের হয়ে গিয়েছে। কিন্তু ব্লগের মত গ্রুপের ক্ষেত্রেও অনিয়মিত কন্টেন্ট এর এঙ্গেইজমেন্ট কমিয়ে দিয়েছে।  

এই ধরনের ছোট বড় আরও অনেক রকমার ভুল করেছি যা ব্লগের গ্রোথ কমিয়ে দিয়েছে। আর এর পেছনে মুল কারণ ছিল যে এটি একটি নন কমার্শিয়াল ব্লগ ছিল। তাই নিয়মিত প্রফেশনাল কাজ গুলো আগে অগ্রাধিকার পেয়েছে।  

আমিতো ভুল গুলো করেছি আমার নন কমার্শিয়াল ব্লগে এবং আমি আগে থেকেই জানতাম এসব ভুল করা যাবে না। কিন্তু সময়ের অভাবে হয়ে গিয়েছে। কিন্তু অনেকেই আছেন যারা না জেনে এই ভুল গুলো করে ফেলেন নিজের ব্লগে অথবা কন্টেন্ট মার্কেটিং ক্যাম্পেইনগুলোতে।

আশা করছি আমার এই পোস্ট আপনাদেরকে বুঝতে সহায়তা করবে যে কোন ভুল গুলো করা যাবে না।

আপনার ভুলগুলোও আমাকে কমেন্ট সেকশনে জানাতে পারেন, যা আমি এবং আমার পাঠকদের সেই ভুল থেকে শিক্ষা নিতে সহায়তা করবে।  

আমার ফেসবুক গ্রুপে জয়েন করুন

রিলেটেড পোস্ট:

Scroll to Top