fbpx

মার্কেটিং ক্যাম্পেইনের সাত সতেরো

মার্কেটিং শব্দটা শুনলেই অনেকের মধ্যে মনে হয় যে মার্কেটিং মানে হচ্ছে পন্যের গুনগান গাওয়া, কিন্তু বেপারটা কিন্তু এমন নয়। এত সহজ কোন কিছু আসলে মার্কেটিং না।

মার্কেটিং এর একই সাথে অনেক গুলো লক্ষ থাকে, এক এক ক্যাম্পেইনের লক্ষ এক এক রকম হয়।

আবার একই সাথে একটা প্রতিষ্ঠানের মার্কেটিং টিম কয়েক ধরনের লক্ষ নিয়ে কাজ করে থাকে, লং টার্ম গোল, শর্ট টার্ম গোল, ইন্সট্যান্ট গোল।

আবার বিজনেসের ধরনের উপর নির্ভর করেও গোল আলাদা হয়ে থাকে।

যেমন ধরেন, একটি বিটুবি প্রতিষ্ঠান, যার পন্য/সেবাটি অনেক দামি। এখানে মানুষ মুলত সোশ্যাল মিডীয়া, অথবা ওয়েবসাইট দেখেই পন্য/সেবা কিনবে না। এখানে প্রথমে লিড জেনারেট করতে হবে, তারপর সেই লিড নার্চার করতে হবে তারপর গিয়ে হয়ত কনভার্শন আসবে একজন সেলস প্রফেশনালের সহায়তায়।

যেমন ধরেন একটি ফ্লাট, অথবা গাড়ি। আপনি ডিজিটাল মিডীয়াতে দেখেই কিনে ফেলবেন না।

আবার একই ভাবে আপনি যখন টুথপেস্ট/সাবান বিক্রি করছেন তখন মনে রাখতে হবে, এখানে আপনার ক্যাম্পেইন থেকেই হয়ত সরাসরি টুথপেস্ট/সাবান বিক্রি হয়ে যাবে। হয়ত হিউমেন কন্সালটেশনের দরকার হবে না, যদি হয়ও, সেটা হয়ত হবে দোকানদারের সাথে, যে কিনা ডিরেক্টলি আপনার প্রতিষ্ঠানের সাথে কানেক্টেড না। অথবা আপনার প্রতিনিধি না। উনি একই সাথে আপনার এবং আপনার কম্পেটিটরের পন্য বিক্রয় করে থাকে। তারমানে সে আপনার পন্যকেই এগিয়ে রাখবে বেপারটা কিন্তু এমন না। আপনার মার্কেটিং প্লানের মধ্যে এটাও মাথায় রাখতে হবে, কিভাবে দোকানদারকে ইনফ্লুয়েন্স করা যায়, যাতে তারা আপনার পন্যকেই এগিয়ে রাখে। ক্রেতারা অনেক সময়ই কনফিউজড থাকলে দোকানদারের সাজেশন নিয়ে থাকে। তারমানে এটাও আপনার মার্কেটিং প্লানের একটি বড় অংশ, কিভাবে দোকানদারের মস্তিস্কে আলাদা ভাবে যায়গা করে নেয়া যায়, যাতে তার কাছে রিকোমেন্ডশন চাইলে আপনার পন্যেকেই রেফার করে।

মার্কেটিং নিয়ে কাজ করার সময় বিগ পিকচার দেখতে হয়, যার উপর নির্ভর করে আমাদের লং টার্ম গোল সেট করতে হয় এবং সেই অনুযায়ি কাজ করতে হয়। খুব ক্লিয়ারলি আইডেন্টিফাই করতে হয়, নিজেদেরকে আমরা কিভাবে পসিশনিং করতে চাচ্ছি। তাই তখন ব্র্যান্ড পসিশনিং নিয়ে কাজ করতে হয়, কম্পিটিটিভ এডভান্টেইজ জেনারেট করতে হয়।

এটা যদিও একটি ছোট আর্টিকেল, তারপরেও আমি আপনাদেরকে বেশ কিছু মার্কেটিং ক্যাম্পেইনের ধরন সম্পর্কে আইডিয়া দিতে পারি। পুরো মার্কেটিং এক্টিভিটিস কে যদি আমি আলাদা আলাদা করে ক্যাম্পেইন দিয়ে ভাগ করি, তাহলে নিচের ক্যাম্পেইন গুলো মাথায় রাখতে হবে।

  • ব্র্যান্ড এওয়ারনেস
  • লিড জেনারেশন
  • প্রোডাক্ট লাউঞ্চিং
  • ব্র্যান্ড লাউঞ্চিং
  • রিব্র্যান্ডিং
  • সিসনাল পুশ
  • সেল জেনারেশন
  • আপসেলিং
  • রিসেলিং
  • ক্রস সেলিং
  • ডিমান্ড জেনারেশন

এখানেই সব নয়, এর বাইরেও আরো অনেক ধরনের ক্যাম্পেইন রয়েছে। এছাড়া ও ডিজিটাল মার্কেটিং কি, কিভাবে আপনি আপনার ক্যারিয়ার শুরু করবেন এ সম্পর্কে জানতে আমার পূর্বের পোস্টগুলো থেকে ধারণা নিতে পারেন। এখন আপনাদের সাথে আমি উপরোল্লিখিত ক্যাম্পেইন গুলো নিয়ে ধারণা দিচ্ছি।

ব্র্যান্ড এওয়ারনেস

এই ক্যাম্পেইনটা মুলত ডিজাইন করা হয় ব্র্যান্ড সম্পর্কে মানুষকে জানানোর জন্য। রিলেভেন্ট এক্টিভিটিজ যেটা মানুষকে আমাদের ব্র্যান্ড সম্পর্কে এওয়ার করবে। যেমন বিভিন্ন ইভেন্ট স্পনসরশিপ, সেখানে আমাদের লোগো, আমাদের উপস্থিতি আমাদের ব্র্যান্ডকে আমাদের টারগেট কাস্টোমারের কাছে পরিচিত করে তুলে।

লিড জেনারেশন

এটি মুলত লিড জেনারেট করার জন্য করা হয়ে থাকে। এই ক্যাম্পেইন গুলোর উদ্যেশ্যই থাকে সম্ভাব্য ক্রেতার ডিটেইল কালেক্ট করা যাতে পরবর্তিতে সেলস টিম অথবা মার্কেটিং টিম থেকে তাদের সাথে যোগাযোগ স্থাপন করা যায়। মুলত যেই পন্য/সেবার দাম অনেক বেশি হয়, তাদের ফানেলে লিড জেনারেশন সবচাইতে বেশি গুরুত্ন পেয়ে থাকে।

প্রোডাক্ট লঞ্চিং

নতুন কোন প্রোডাক্ট লঞ্চ করার ক্ষেত্রে এই ধরনের ক্যাম্পেইন রান করা হয় যাতে সর্বোচ্চ এক্সপোসার পাওয়া যায়। প্রতিটা প্রোডাক্ট মার্কেটে ইন্ট্রিডিউস করার ক্ষেত্রে অনেক কিছু হিসেব নিকেশ করে, প্লান করে তারপর লঞ্চ করতে হয়।

ব্র্যান্ড লঞ্চিং

বেপারটা আরো কঠিন যখন আপনি নতুন ব্র্যান্ড লঞ্চ করছেন। প্রথম ইম্প্রেশন সবসময় অনেক গুরুত্বপুর্ন। তাই মনে রাখতে হবে ব্র্যান্ড লঞ্চ করার সময়টা খুবই গুরুত্বপুর্ন। এটা খুব ক্রিয়েটিভ হতে পারে, এটা খুব ক্যালকুলেটিভ হতে পারে। প্রতিটা স্টেপ অনেক বেশি গুরুত্বপুর্ন তাই এই ধরনের ক্যাম্পেইন যেহেতু বার বার করার সুযোগ নেই, তাই একটু ভাল প্লানিং এবং প্রিপারেশন নিয়ে এই ধরনের ক্যাম্পেইনের কাজ শুরু করা উচিত।

রিব্র্যান্ডিং

এই ক্যাম্পেইনটি মুলত ডিজাইন করা হয় কোন এক্সিসটিং ব্র্যান্ডকে নতুন ভাবে পরিচয় করিয়ে দিতে, অনেক সময় ব্র্যান্ডের নাম পরিবর্তন হয়, লোগো পরিবর্তন হয়, ব্র্যান্ড কালারে পরিবর্তন হয়। তখন নতুন নাম/ব্র্যান্ড ম্যাটেরিয়ালের সাথে পরিচয় করিয়ে দিতে এই ক্যাম্পেইন ডিজাইন করা হয়।

সিসনাল পুশ

এটি মুলত কোন নির্দিষ্ট সিসনে সেল টারগেট এচিভ করার জন্য ডিজাইন করা হয়। যেমন ধরেন শীত প্রায় শেষের দিকে, তখন কোন একটি ক্যাম্পেইন রান করা যেতে পারে, যেটা এগ্রেসিভ সেল জেনারেট করতে সাহায্য করবে। যেমন ধরেন একটি কিনলে একটি ফ্রী।

সেল জেনারেশন

এই ক্যাম্পেইনটি ডিজাইন করা হয়ে থাকে সরাসরি সেল জেনারেট করার জন্য। যেই প্রোডাক্ট গুলোর দাম তুলনা মুলক ভাবে কম, বিশেষ করে নিত্য প্রয়োজনীয় পন্য, পর্যাপ্ত ব্র্যান্ড পরিচিতি তৈরি হয়েছে, তখন এই ধরনের ক্যাম্পেইন থেকে ভাল সরাসরি সেল জেনারেট করা যায়। লিড জেনারেট না করেই।

আপসেলিং এবং ক্রস সেলিং

এই ক্যাম্পেইনগুলো মুলত একই পন্যের এডভান্স/বড় ভার্শন অথবা একই প্রতিষ্ঠানের অন্য প্রোডাক্ট সেল করার জন্য ডিজাইন করা হয়ে থাকে। যেমন ধরেন একটি চিকেন ফ্রাই না কিনে ২ টি চিকেন ফ্রাই কেনার জন্য উৎসাহী করা যেতে পারে, সেটা হবে আপসেলিং। আবার চিকেন ফ্রাই এর সাথে ফ্রেঞ্চ ফ্রাই এবং কোক কিনতে উৎসাহী করাটা হচ্ছে ক্রস সেলিং।

ডিমান্ড জেনারেশন

এই ক্যাম্পেইনটি হচ্ছে মুলত ডিমান্ড জেনারেট করার জন্য। যেমন ধরেন আমাদের ফোনের যে মৌলিক চাহিদা রয়েছে, তা কিন্তু সব ফোনের মাধ্যমেই পুরন করা সম্ভব, কিন্তু প্রতিনিয়ত আমরা আপডেটেড মোবাইল খুজি, নতুন নতুন ফিচার। এবং এর পিছনে ডিমান জেনারেশন ক্যাম্পেইন গুলো কাজ করে।

প্রত্যেকটা ক্যাম্পেইন নিয়েই বিস্তারিত লিখার অনেক কিছু আছে, যা নিয়ে সামনে লিখবো।

আরো টিপস পেতে জয়েন করতে পারেন আমার ফেসবুক গ্রুপে

এছাড়াও আমাদের লিঙ্কডইন পেইজে কানেক্টেড থাকতে পারেন, যেখানে আমরা অনেক দরকারি রিসোর্স শেয়ার করে থাকি।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top